BCS KI | বিসিএস কি এবং এর সম্পর্কিত আলোচনা

 বিসিএস কি এবং এর সম্পর্কিত আলোচনা:

BCS KI | বিসিএস কি এবং এর সম্পর্কিত আলোচনা
বর্তমানে বাংলাদেশের সবচেয়ে আলোচিত ক্যারিয়ার হলো বিসিএস ক্যাডার হওয়া। একই সাথে সরাসরি দেশের সেবা করা ও দারুণ সব সুযোগ সুবিধার জন্য শিক্ষার্থী থেকে শুরু করে শিক্ষার্থীর অভিভাবক পর্যন্ত, সবারই প্রথম পছন্দ থাকে বাংলাদেশ সিভিল সার্ভিসে ক্যারিয়ার গড়া। শত শত বা হাজার হাজার নয়, প্রতি বছর লক্ষ লক্ষ তরুণ এই ক্যারিয়ারের স্বপ্নে বিভোর হয়ে বিসিএস পরীক্ষা দেয়। লক্ষ লক্ষ তরুণ পরীক্ষা দিলেও স্বপ্ন পূরণ হয় মাত্র কয়েক হাজারের। এ কারণেই বিসিএসের দৌড়ে এগিয়ে থাকতে অনা
র্স বা বিশ্ববিদ্যালয় জীবনের শুরু থেকেই বিসিএস প্রস্তুতি শুরু করতে চান অনেকে। আজকের লেখাটা তাদের জন্যই।

বিসিএস প্রতিযোগিতামূলক পরীক্ষা

বিসিএস পরীক্ষা দেশের সবচেয়ে প্রতিযোগিতামূলক পরীক্ষা;

বিসিএসের আদ্যোপান্ত (From beginning to end of BCS)

বিসিএস (BCS) এর পূর্ণরূপ হল বাংলাদেশ সিভিল সার্ভিস। বিসিএস পরীক্ষা হলো এই সিভিল সার্ভিসে ঢোকার জন্য যে পরীক্ষা দিতে হয় তা। সাধারণভাবে বাংলাদেশের সরকারি চাকরি দুই ভাগে বিভক্ত। একটি মিলিটারি, অন্যটি সিভিল সার্ভিস। সেনাবাহিনী, নৌবাহিনী, বিমানবাহিনী অর্থাৎ মিলিটারির বাইরে প্রশাসন, পররাষ্ট্র, পুলিশ, ট্যাক্স ইত্যাদি সেক্টর সিভিল সার্ভিসের অন্তর্ভুক্ত।
আর ক্যাডার বলতে বুঝানো হয় কোনো সুনির্দিষ্ট কাজ করার জন্যে বিশেষ ভাবে প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত একটি দল। সরকারি চাকরির সুনির্দিষ্ট দায়িত্ব পালন করতে নিয়োগপ্রাপ্তদের বিশেষ প্রশিক্ষণ দিয়ে গড়ে তোলা হয়, যাদেরকে সিভিল সার্ভিস ক্যাডার বা বিসিএস ক্যাডার বলা হয়।
বিসিএস ক্যাডার মূলত দুই প্রকার- জেনারেল ও টেকনিক্যাল। জেনারেল ক্যাডার থেকে যে কেউ যে কোনো বিষয় থেকে পরীক্ষা দিয়ে চাকরি করতে পারেন, কিন্তু টেকনিকাল ক্যাডারের ক্ষেত্রে নির্দিষ্ট বিষয়ে শিক্ষাগত যোগ্যতা থাকতে হয়। বর্তমানে ২৬ ধরনের ক্যাডার রয়েছে।
উল্লেখ্য, জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের অধীন একটি সংযুক্ত দপ্তর হিসেবে বাংলাদেশ সিভিল সার্ভিস প্রশাসন একাডেমি ২১ অক্টোবর ১৯৮৭ তারিখে যাত্রা শুরু করে। ২১ অক্টোবর ১৯৮৭ হতে ৩০ জানুয়ারি ১৯৮৮ তারিখ পর্যন্ত তিন মাস মেয়াদি আইন ও প্রশাসন কোর্সের মাধ্যমে যাত্রা আরম্ভ করে।

আবেদন যোগ্যতা

৪৪ তম বিসিএস সার্কুলার অনুযায়ী, মুক্তিযোদ্ধা/ শহীদ মুক্তিযোদ্ধাদের পুত্র-কন্যা, প্রতিবন্ধী প্রার্থী এবং বিসিএস (স্বাস্থ্য) ক্যাডার প্রার্থী ছাড়া অন্যান্যদের বয়স হতে হবে ২১ থেকে ৩০ বছর। অন্যান্যদের ২১ থেকে ৩২ বছর।
জেনারেল ক্যাডারের ক্ষেত্রে, যে কোনো স্বীকৃত বোর্ড থেকে এইচএসসি বা সমমানের পরীক্ষা পাসের পর চার বছর মেয়াদি শিক্ষা সমাপনী ডিগ্রি অথবা যেকোনো বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্নাতকোত্তর বা সমমানের ডিগ্রি থাকতে হবে। একাধিক তৃতীয় বিভাগ গ্রহণযোগ্য হবে না।
পরীক্ষাপদ্ধতি ও মানবণ্টন
বিসিএস পরীক্ষা তিনটি ধাপে অনুষ্ঠিত হয়। আসলে এটিই বিসিএস পরীক্ষার ফলাফল বা সম্পূর্ণ কার্যক্রম শেষ হওয়ার প্রধান কারণ!

প্রিলিমিনারী

প্রিলিমিনারীতে মূলত ২০০ নম্বরের মাল্টিপল চয়েস প্রশ্নের উত্তর করতে হয়। এর মাধ্যমে মূলত বেসিক সাব্জেক্টগুলোতে প্রার্থীর দক্ষতা যাচাই করা হয়। বাংলা ভাষা ও সাহিত্য, ইংরেজি ভাষা ও সাহিত্যের প্রত্যেকটিতে ৩৫; বাংলাদেশ বিষয়াবলিতে ৩০; আন্তর্জাতিক বিষয়াবলিতে ২০; গাণিতিক যুক্তি, সাধারণ বিজ্ঞান, কম্পিউটার ও আইসিটি, মানসিক দক্ষতার প্রতিটিতে ১৫ এবং ভূগোল ও পরিবেশ-দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা, নৈতিক মূল্যবোধ ও সুশাসনে ১০ করে মোট ২০০ নম্বরের পরীক্ষা হয়ে থাকে। প্রতিটি প্রশ্নের মান ১ এবং প্রতিটি ভুল উত্তরের জন্য ০.৫০ করে কাটা যাবে। পরীক্ষার সময় ২ ঘণ্টা।

লিখিত

প্রিলিমিনারীতে উত্তীর্ণ শিক্ষার্থীরা লিখিত পরীক্ষার জন্য যোগ্য বলে বিবেচিত হবেন। লিখিত পরীক্ষায় বাংলা, ইংরেজি, বাংলাদেশ বিষয়াবলিতে ২০০ করে; আন্তির্জাতিক বিষয়াবলিতে ১০০; গাণিতিক যুক্তি-মানসিক দক্ষতা ও সাধারণ বিজ্ঞান-প্রযুক্তি এর ওপর ১০০ করে মোট ৯০০ নম্বরের পরীক্ষা হয়ে থাকে। টেকনিক্যাল ক্যাডারের ক্ষেত্রে, বিষয়গুলোতে কিছুটা ভিন্নতা রয়েছে। বাংলা, ইংরেজি ও অন্যান্য ভাষার প্রশ্নের উত্তরে সংশ্লিষ্ট বিষয় ছাড়া অন্যান্য প্রশ্নের উত্তর প্রার্থী বাংলা বা ইংরেজি যেকোনো ভাষায় উত্তর করতে পারবেন। চাইলে সাধারণ এবং টেকনিক্যাল দুটি ক্ষেত্রেই একজন প্রার্থী আবেদন করতে পারবেন।

মৌখিক

লিখিত পরীক্ষায় উত্তীর্ণ প্রার্থীরা ২০০ নম্বরের মৌখিক পরীক্ষার জন্য বিবেচিত হবেন।
লিখিত ও মৌখিক পরীক্ষায় মোট প্রাপ্ত নম্বরের ভিত্তিতে চূড়ান্তভাবে একজন প্রার্থীকে ক্যাডার হিসেবে সুপারিশ করা হয়।
Next Post